পিচ্চি বউ প্রথম পর্ব || New Romantic Bangla Story.

পিচ্চি বউ প্রথম পর্ব

Picci Bow, New Bangla Story, Bangla poem, new bangla story

আমি সবুজ। আমি একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করি। আমার বিয়ের জন্য বাড়ি থেকে পাত্রী দেখা হচ্ছে । আমার একটা পাত্রী ও পছন্দ হচ্ছিলো না হঠাৎ বাড়ি থেকে ফোন করে বললো একটা সুন্দর পাত্রী পেয়েছি আমাকে অফিস ছুটি নিয়ে পাত্রীটা দেখতে যেতে হবে। আমি বললাম ঠিক আছে কালকেই যাবো । 

অফিস থেকে ছুটি নিয়ে বাড়িতে চলে আসলাম ওইদিন বাড়িতে আসতে বিকাল হয়ে গিয়েছিলো বলে তারপর দিন সকালে পাত্রী দেখতে গেলাম। পাত্রীর বাসা আমার বাসা থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে ছিলো । আমার সাথে আমার আব্বু আম্মু আর ছোট বোন গিয়েছিলো । আমরা গিয়ে মেয়ের বাড়িতে পৌছানোর পর ওরা সবাই বসতে বলল মেয়ের বাড়ির লোক আমাদের নাস্তা খেতে দিলো। 

এবার আম্মু বলল কই আপনাদের মেয়েকে নিয়ে আসেন আমার ছেলে আর কতক্ষণ বসে থাকবে । এবার মেয়েকে নিয়ে আসা হলো কিন্তু আমি মেয়েকে দেখে আমি পুরো অবাক হয়ে গিয়েছি মেয়েটার এখন ও বিয়ের বয়স হয়নি । মাত্র SSC পাশ করেছে আর এখনি বিয়ে দেয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে গিয়েছে ।  এখন ও পিচ্চি আছে।

SSC পাশ করলেই কি মেয়েদের বিয়ের বয়স হয়ে যায় ? মেয়েটার পরিবারের অবস্থা  একটু খারাপ বলে এত তারাতারি বিয়ে দিচ্ছে । মেয়েটা দেখতে সুন্দর মায়াবী চেহারা। মেয়েটাকে দেখে আমার বাসার সবার পছন্দ হয়ে গিয়েছে .আর আম্মু তো বলে বসলো এটাই আমার বউমা এই মেয়ের সাথে আমার ছেলের বিয়ে দিবো বলে আম্মু মেয়েটাকে বলল তোমার নাম কি মা?

আমার নাম শ্রাবণী (মেয়েটা বলল) 

বা খ্বু সুন্দর নাম তো (আমি মনে মনে বললাম) 

তোমার নামটা খুব সুন্দর তোমাকে আমি আমার ঘরের লক্ষিকরে নিয়ে যাব।  (আম্মু বলল) 

মেয়ে আমাদের খুব পছন্দ হয়েছে খুব তারাতারি ৪ হাত এক করতে চাই ( আব্বু বলল )

এত তারাতারি কিভাবে হবে আমাদের এইদিকে সব ঠিকঠাক করতে হবে (মেয়ের বাবা) 

আপনাদের কিছু করতে হবে না আমরা ২-৪ জন এসে বিয়ে পড়িয়ে নিয়ে যাবে (আব্বু) 

তা কি করে হয় আমাদের ২ দিন সময় দেন এত তারাতারি করলে হবে না (মেয়ের বড় ভাই)

আমরা কিছু শুনবো না বলে মেয়ের হাতে ১০০০ টাকা দিয়ে মেয়েকে ঘরে নিয়ে যেতে বলল (আম্মু)   

মেয়েটি আমার দিকে তাকিয়ে আছে আমি ও মেয়েটাকে দেখছি আমার ও খুব পছন্দ হয়েছে 

কিরে তোরা কি আলাদা ভাবে কথা বলতে চাই নাকি ?(আব্বু) 

না আমি আবার কি কথা বলবো।(আমি) 

আলাদা ভাবে কথা বলার কোনো দরকার নেই একবারে বিয়ের দিন কথা বলবে যত পারে (আম্মু)।  

এই বলে শ্রাবণীকে নিয়ে ঘরে চলে গেলো আমরা কিছুক্ষন বসে বাসায় চলে আসলাম বাসায় এসে আমি আম্মুকে বললাম এত পিচ্চি মেয়েকে কি বিয়ে করা ঠিক হবে? 

এই পিচ্চি মেয়েটার একদিন অনেক বড় হয়ে যাবে এই সংসারের দায়িত্ব নিজের হাতে নিবে দেখিস, তোর কি শ্রাবণী কে পছন্দ হয়নি?(আম্মু)

আরে সেটাকি আমি বলেছি শ্রাবণীর বয়স একটু কম ওই জন্য বললাম (আমি) ।

ওকে আর কোনো সমস্যায় থাকলো না ২ দিন এর মধ্যে বিয়ে দিসছি তোদের আজকেই তোর আব্বু আসুক  শ্রাবণীদের বাড়িতে ফোন করে তোদের বিয়ের পাকা কথা বলছি।(আম্মু)

এত তারাতারি কেনো তাহলে তো অফিস ছুটি নিতে হবে ?(আমি)

যা আজকেই ফোন করে ছুটি নে দুইদিন পর তোদের বিয়ে যা করার এই দুইদিনের মধ্যে কর। 

পরে আব্বু এসে শ্রাবণীদের বাসায় ফোন করে আমাদের বিয়ের তারিখ ঠিক করেছে। এই করতে করতে আজ আমাদের বিয়ের দিন আমার খুব ভয় করতেছিলো এত অল্প বয়সী মেয়ের সাথে বিয়ে করতে যাচ্ছি না যানি কি হয়। আমি ভয়ে ভয়েই বিয়ে করতে গেলাম বিয়েটা ঠিক ঠাক ভাবেই হলো আমরা বাড়িতে চলে আসলাম বাড়িতে এসে শ্রাবণী খুব কান্না করছে বাড়ির জন্য মন খারাপ করছে ওই জন্য আগে তো একা কোথাও থাকেনি তাই বুঝি কান্না করছে। আমি কি করবো বুঝতে পারছিলাম না। তো আম্মু গিয়ে  শ্রবণী কান্না করতে নিষেধ করলেন । আমি শ্রাবণীকে দেখে ভাবছি আমার বিয়ে হলো তাও একটা পিচ্চি মেয়ের সাথে । বাহিরের সবাই দেখে না যানি কি বলবে  আজ আমাদের বাসর রাত । শ্রাবণীকে আমার  রুমে রেখে আসলো আমার বোনেরা। আমি রুমে ঢুকে দেখি আমার পিচ্চি বউটা মাথায় ঘুমটা দিয়ে বিছানাতে বসে আছে আমি বিছানার দিকে এগিয়ে গেলাম আমি বিছানার পাশে এসে দাড়াতেই মেয়েটা বিছানা থেকে নেমে আমার পা ধরে সালাম করতে লাগলো , পিচ্চিটা আমার পা ধরে সালাম করে যাচ্ছে উঠার কোনো নাম গন্ধ নেই। আমি ধমক দিয়ে বললাম,


- এই পা ধরে আছো কেনো পা ধরতে হয় না উঠ তারাতারি ?

- তুমি উঠাও আমি একা উঠতে পারবো না 

- আমি কেনো উঠাবো তুমি নিজেই উঠো?

- না.. তুমি না উঠালে আমি উঠবোই না 

- কেনো? 

- আমি তো জানি বাসর রাতে বউ তার স্বামীকে পা ধরে সালাম করলে, স্বামী বউকে তুলে বুকে জড়িয়ে নেয়,,তাই তুমিও আমাকে সেই ভাবে জড়িয়ে নিবা ?

- আমি ওর কথা মত পিচ্ছি তাকে তুলে আমার বুকে জড়িয়ে রাখলাম 

পিচ্ছি বউটা যে কতটা খুশি হয়েছিলো বলে বোঝানো যাবে না। পিচ্ছিটার হাসি মুখটা দেখে আমার অনেক ভালো লাগছিলো । আমরা দুজনে অনেক গল্প করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম বুঝি নাই। সকালে পিচ্চি বউটার ডাকে ঘুম ভেঙ্গেছে পিচ্ছি বউটা সকালে উঠে সকল কাজ শেষ করে আমার জন্য চা  নিয়ে এসেছে 

- ওই উঠেন আপনার জন্য চা নিয়ে এসেছি খেয়ে নেন?(পিচ্চিটা)

- তুমি করেছো কি এত সকালে তোমাকে চা নিয়ে আসতে কে বলেছে ?(আমি) 

- এখন থেকে আপনার খেয়াল রাখতে হবে আপনার যতœ নিতে হবে তাই 

- তাই বুঝি তুমি তোমার  যতœ নাও আমারটা নেওয়া লাগবে না 

- তা  বললে তো হবে না আমি আপনার বউ আপনার সব দিক দেখা আমার দায়িত্ব 

- ওকে ঠিক আছে । আগে তোমার দিকে নিবা তারপর আমার দিকে নিও আর এত সকাল করে ঘুম থেকে তোমাকে উঠা লাগবে না  ?

- তাই বললে হবে নাকি সকালে তো কাজ করায় লাগবে তা না হলে সবাই খারাপ বলবে

- আমি তোমার সাথে কথায় পারব না দেখছি 

- আপনাকে পারতেও হবে না । আপনি উঠেন ফ্রেশ হয়ে নেন  সবাই আপনাকে ডাকছে 

বলে আমার পিচ্ছি বউটা নিচে চলে গেলো । আমি ফ্রেশ হয়ে নিচে গিয়ে দেখি শ্রাবণী আম্মুকে রান্না করায় সাহায্য করছে । আম্মু আমাকে দেখে বলছে দেখ আমার বউমাটা কত কাজের আমার কাজে কত সুন্দর করে সাহায্য করছে কোনো কাজ  আমাকে করতে দিতে চাইছে না সব কাজ নিজে করছে  । আমি বললাম তুমি পছন্দ করে নিয়ে এসেছো তাইতো তোমার সব কাজ করে দিসছে । এই কথা শুনে শ্রাবণী আমার দিকে বলছে দরকার হলেই তাই করব । প্রথম দিনেই পিচ্চিটা আমাকে ভালোবেসে ফেলেছে আমিও পিচ্চিটাকে খুব ভালোবেসে ফেলেছি মনে হয়, না দেখে থাকরতেই পারবে না ? 

এদিকে আবার ২ দিন পর আমার অফিস আমাকে ঢাকায় চলে যেতে হবে। আমি পিচ্চিটাকে ছাড়া কিভাবে থাকবো বুঝতে পারছি না পিচ্চিটা যানে না যে আমাকে পরশুদিন ঢাকায় চলে যেতে হবে । যানলে আর পিচ্চিটার মন খারাপ হয়ে যাবে এত সুন্দর হাসি আর থাকবে না তাই পিচ্চিটাকে আমি আর কিছুই বললাম না । কিন্তু আজ রাতে সব বলতে হবে । না হলে আমার উপর খুব রাগ করবে । 

আজ দুপুরে শ্রাবণী রান্না করবে আমি আম্মুকে বললাম শ্রাবণী আবার রান্না করতে পারবে তো সেই খাবার খাওয়া যাবে তো আম্মু বললো যেমন রান্না করবে তেমনই খেতে হবে আমি বললাম ঠিক আছে বলে আমি বাহিরে চলে গেলাম দুপুর হয়ে গেল বাসায় এসে দেখি শ্রাবণীর রান্না করা শেষ। রুমে বসে আছে মন খারাপ করে আমি গিয়ে বললাম 

- কি হয়েছে তোমার মন খারাপ কেনো?

- কিছু হয়নি । এমনিতেই 

- বাড়ির জন্য মন খারাপ করছে তোমার 

- না...

- তাহলে মন খারাপ কেন বল ?

- আপনাকে কিছু শুনতে হবে আপনি যেখানে ছিলেন ওখানে যান..

- ও বুঝেছি আমি ছিলাম না বলে তুমি আমার উপর রাগ করেছো?

- আপনি বুঝেন না আপনাকে ছাড়া আমার ভালো লাগে না তাও একা রেখে চলে যান?

- সরি একটু কাজ ছিলো.

- আর সরি বলতে হবে না যান হাত মুখ ধোয়ে আসেন খেতে হবে এখন।

- ওকে যাচ্ছি ।।।।

বলে আমি হাত মুখ ধোতে গেলাম আর ভাবছি শ্রাবণীকে কিভাবে বলব যে আমাকে পরশুদিন চলে যেতে হবে? শ্রাবণী তো একা থাকতে পারবে না শ্রাবণীকে কয় একদিন এর জন্য তার বাবার বাড়িতে রেখে আসতে হবে এই নিয়ে বাসায় কথা বলতে হবে।

(চলবে...)

Written By
Bhanga Bhai

Comments

Popular posts from this blog

দুঃখ - বাংলা কবিতা। New Bangla Poem 2022 || Sad Status Bangla

Dour De || Fokir Lal Miah || দৌড় দে || ফকির লাল মিয়া Lyrics.

KGF Chapter-2 Full Movie in Bangla. কেজিএফ স্টোরি বাংলা